হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন?
আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন।।
মোবাইল ফোন বর্তমান সময়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ডিভাইস। সময়ের ব্যবধানে বাড়তি যোগ হয়েছে স্মার্টফোন। এই দশকে স্মার্টফোনের ব্যবহার বেড়ে গেছে বহুগুণ। সকল শ্রেণি পেশা এমনকি সব বয়সের মানুষের হাতে হাতে আজ স্মার্টফোনের ছড়াছড়ি। প্রযুক্তির কল্যাণে এই আধুনিক জীবন যেন স্মার্টফোন নির্ভর। সব বয়সের মানুষের পাশাপাশি বর্তমানে শিশুদের হাতে হাতে স্মার্টফোন চোখে পড়ার মতো।
মোবাইল ফোন যোগাযোগের মাধ্যম হলেও স্মার্টফোনের রয়েছে বহুমাত্রিক সুবিধা। ইন্টারনেটের দৌলতে স্মার্টফোন এখন একজন মানুষের জন্য কখনও গাইড, কখনও শিক্ষক কখনো বা বন্ধু। জ্ঞানের এক মহারাজ্যের নাম স্মার্টফোন। অনেকের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কাজে দারুণ ভূমিকাও পালন করছে এই ডিভাইসটি। তবে সবকিছুর পাশাপাশি এর রয়েছে মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাবও। বিশেষ করে শিশু, কিশোর ও তরুণদের জন্য স্মার্টফোন যতটা আশির্বাদ ততটাই অভিশাপ। এই প্রজন্মকে একদিকে আলোর পথে নিচ্ছে এই স্মার্ট ডিভাইস আবার অন্ধকারেও ঠেলে দিচ্ছে। তাই শিশুর জন্য স্মার্টফোন কতটা ক্ষতিকর তা বলাই বাহুল। স্মার্টফোন শিশুদের জন্য কেন ক্ষতিকর? চলুন তবে জেনে নেয়া যাক।
Brain Tumor
টিউমার ও ক্যান্সর
মোবাইল ব্যবহার থেকে শিশুদের টিউমার হতে পারে। স্বাভাবিক ব্যবহারেই টিউমার হবে বিষয়টি এমন নয়। দীর্ঘ সময় ধরে মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে শিশুদের টিউমার হওয়ার উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে। স্মার্টফোন সহজলভ্য হওয়ার আগে থেকেই মোবাইল রেডিয়েশন নিয়ে অনেক গবেষণা, আলোচনা, সমালোচনা হয়েছে। যেহেতু মোবাইল ফোন তরঙ্গ শক্তির মাধ্যমে চলে এবং বিষয়টি পুরোপুরিই অদৃশ্য তাই এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণের সহজ কোন উপায়ও নেই। তাই এর ঝুঁকির মাত্রাও বেশি।
শিশুকাল একজন মানুষের জন্য বাড়ন্ত বা উঠতি সময়। এ সময় তাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলো অপরিণত থাকে তাই মোবাইল রেডিয়েশনের ফলে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের চেয়ে শিশুদের ক্ষেত্রে ঝুঁকির মাত্রাও বেশি। মোবাইল রেডিয়েশন তাদের কান ও মস্তিস্কে প্রভাব ফেলে স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি করে থাকে। শরীর গঠনের সময় একজন শিশুর যদি স্নায়বিক ডিসফাংশন দেখা দেয় তবে তাকে সারাজীবন এই ভোগান্তি পোহাতে হবে। শিশুর শরীরের সংবেদনশীল অঙ্গগুলো প্রায় ৬০ শতাংশ মোবাইল রেডিয়েশন শোষণ করে থাকে। এর ফলে টিউমার এমনকি ক্যান্সারও হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা শিশুর এই সমস্যাটিকে ‘সম্ভাব্য কার্সিনোজেন’ বলে আখ্যায়িত করেছে।
Mobile Radiation
মস্তিস্কের ক্রিয়াকলাপে ব্যাঘাত ঘটায়
মানুষের মস্তিস্কের নিজস্ব বৈদ্যুতিক প্রবণতা রয়েছে। এছাড়া মানুষের মস্তিস্ক মানুষকে পরিচালনা করে। এর ভেতরে যাবতীয় কার্যক্রম সম্পাদন হয় নিউরাল নেটওয়ার্কে। আমাদের মনে যখন কোন ভাবনা উদয় হয় তখন আমাদের মস্তিস্কের নিউরনগুলো সক্রিয়ভাবে সেই ভাবনাকে দ্রুত বাস্তবায়ন কিংবা বিশ্লেষণ করে আমাদের একটা সিদ্ধান্ত দিতে নির্দেশ করে। শুধু তাই নয় সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্বয়ংক্রিয়ভাবে শরীরের অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গেও বার্তা পাঠায় সেই ভাবনা বা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য। আমাদের ভাবনা ও বাস্তবায়ন যখন কোন বাধা ছাড়াই সম্পন্ন হয় তখন আমরা মানসিক তৃপ্তি পাই, অন্যথায় বিরক্ত হই। এটিই আমাদের মস্তিস্কের স্বাভাবিক কার্যপ্রাণালী।
স্বভাবতই শিশুদের শরীর প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের চেয়ে অপরিণত। তাই মোবাইল ফোনের রেডিয়েশন প্রতিরোধ করার মতো য়থেষ্ট প্রতিরোধ ক্ষমতা একজন শিশুর মস্তিস্কে থাকে না। তাই এই রেডিয়েশন যখন তার মস্তিস্কে প্রবেশ করবে তখন শিশুর মস্তিস্কে এক ধরনের মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় যার ফলাফল তাৎক্ষণিক বুঝা যায় না। ছোটবেলা থেকে কোন শিশু মোবাইল ফোনে বেশি অভ্যস্ত হলে এবং একইভাবে বড় হতে থাকলে তারা খুব বদমেজাজী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে কারণে তার মস্তিস্কের কার্যকলাপ সাধারণ মানুষের মতো থাকে না। এক ঘেয়ে হতে পারে, অপরাধ প্রবণ হতে পারে কিংবা যে কোন বিকৃত মানসিকতার হতে পারে, হতে পারে বুদ্ধি প্রতিবন্ধীও।
Child
স্কুলে স্কুলব্যাগ, বই, খাতা, কলম পেন্সিলের পাশাপাশি শিশুদের এখন নতুন সঙ্গী হিসেবে যুক্ত হয়েছে স্মার্টফোন। স্কুলে অনুমতি না থাকলেও লুকিয়ে শিশুরা তা ব্যবহার করছেই। কোনভাবেই আটকানো যাচ্ছে না। সে কারণে শিশুদের পড়াশোনার চেয়ে বেশি মনযোগ আটকে থাকছে মোবাইল ফোনে। ক্লাসের বিরতি এমনকি ক্লাস চলাকালেও স্মার্টফোনের সেলুলার ডিসপ্লে থেকে চোখ সরছে না তাদের। শিশুদের মোবাইল ফোনের আসক্তির ফলে বছর শেষে কিংবা যে কোন পরীক্ষায় প্রভাব পড়ছে ব্যাপক। পাঠ্যপুস্তক বাদ দিয়ে গেমস, ফেসবুক, টিকটকের দুনিয়ায় ডুবে থাকার কারণে শুধু তাদের পড়াশোনারই ক্ষতি হচ্ছে না বরং তাদের ভবিষ্যত অন্ধকারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
Porn*ography
অনুপযোগী মিডিয়া
মোবাইল ফোনে আসক্ত শিশুরা গ্রুপে বা নিজের মধ্যে বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করে এবং ভাব বিনিময় করে। এক্ষেত্রে একজন শিশু যদি খারাপ হয়ে যায় তবে তা গ্রুপের মাধ্যমে সব শিশুদের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়ে। অনুভূতি শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করে অন্য শিশুদের উপরও। এর মাধ্যমে শিশুরা কুরুচিপূর্ণ মিডিয়া, টেক্সট এমনকি নিজেদের বীভৎস্য ছবি কিংবা ভিডিও শেয়ার করে থাকে। এভাবেই একজন শিশু ধীরে ধীরে পর্ণোগ্রাফির দিকে ধাবিত হয়। একবার কোন শিশু পর্ণোগ্রাফিতে আসক্ত হলে তাকে আর সহজে ফেরানো সম্ভব হয় না। প্রর্ণোগ্রাফি মাদকের মতোই ভয়ঙ্কর নেশা।
বিশেষত এই তিনটি সমস্যাই শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা যায়। এছাড়া, মানসিক স্বাস্থ্য, ঘুমের ব্যাঘাত ও নানা শারীরিক, মানসিক, সামাজিক সমস্যার মধ্য দিয়ে শিশুরা বেড়ে উঠছে। এ অবস্থা যে কোন জাতির নতুন প্রজন্মের জন্য হুমকি।
তো বন্ধুরা, আশা করি পোস্ট টি সবার খুবই ভালো লেগেছে।
সবাই ভালো থাকবেন,
সুস্থ থাকবেন,
এবং
ট্রিকবিডির সাথেই থাকবেন।
এই আশাতে আজ এখানেই শেষ করছি।
নমস্কার।।
The post স্মার্টফোনের দ্বারা বাচ্চাদের হতে পারে মারাত্মক ক্ষতি। এই পোস্ট থেকে সাবধান হোন সবাই। ⚠️ appeared first on Trickbd.com.
from Trickbd.com https://ift.tt/Xgrf7Jy
via IFTTT
Emoticon