ঈদ মানে আনন্দ ঈদ মানেই খুশি। আর বিনোদনপ্রেমী মানুষদের কাছে আলাদা করেই ঈদ মানে নতুন সিনেমা।
ওটিটি এর জয়জয়কার এর মধ্যেই বিভিন্ন প্রতিকূলতা কাটিয়ে। এখন বাংলা সিনেমা মুক্তি পেতে শুরু করেছে প্রেক্ষাগৃহে।
এবার ঈদেও মুক্তি পেয়েছে তিন বাংলা সিনেমা, যার মধ্যে আরো একটি নিয়ে আজ কথা বলব। বলছিলাম *দিন দ্যা ডে* সিনেমা নিয়ে।
শুরুতেই সিনেমার গল্প নিয়ে কথা বলি।
অ্যাকশন সিনেমা হল *দিন ন্দা ডে*বাংলাদেশের টিম অর্থাৎ প্রশাসনের একজন যোগ্য অফিসার নায়ক এ জে।
সেই সাথে তার স্ত্রী বর্ষ সরি ইন্ট্রোতে যেমনটা দেখেছিলাম তেমনটাই চলে এসেছে
যাইহোক সিনেমাতে তারা দুজন একই পেশায় নিয়োজিত, তবে *এযে* অর্থাৎ অনন্ত জলিল যার নাম সিনেমাতে *এজে*
তিনি মাদক বিরোধী এক অপারেশনে বিদেশ যান। কোন দেশ এটা জিজ্ঞেস করবেন না কারণ একবার আফগানিস্তান একবার ইরান একবার বাংলাদেশ,
একচুয়ালি কখন কোন দেশে ছিলেন এটা আমি গুলিয়ে ফেলেছি।
তবে তিনি যেখানেই যান সেখানেই একশান, যেখানে এযে সেখানেই একশান। মারদাঙ্গা এই অফিসার এক ভয়ংকর অপরাধী আবু খালিদকে ধরতে।
দুর্গম সব যাত্রাপাড়ি দেন। এভাবেই মূলত এগোতে থাকে সিনেমার গল্প। এর থেকে বেশী বলে দিলেই স্পয়লার দেয়া হয়ে যাবে।
বাকিটা না হয় আপনি সিনেমা হলে গিয়েই দেখে নিয়েন।
এই সিনেমার রিভিউ দিব দুই ভাগে ভাগ করে, ইতিবাচক দিক এবং নীতিবাচক দিক।
শুরুতেই ইতিবাচক দিক নিয়ে কথা বলা যাক।
সিনেমার লোকেশন গুলো খুবি সুন্দর ছিল যেহেতু ফরেন লোকেশন এ শুট করা হয়েছে তাই সিনেমার ৮০% দৃশ্য।
এজন্য মোটামুটি প্রত্যেকটি সিন ই আপনার দেখতে ভালো লাগবে।
ক্যামেরার কাজ ও বেশ ভালো হয়েছে টেকনোলজিতে নিশ্চিতভাবে কোন কার্পণ্য করেনি সিনেমা কর্তৃপক্ষ।
যেহেতু পুরো সিনেমার সঙ্গে পরিচালক সহ, অভিজ্ঞ একটি ইরানি টিম জড়িত ছিলেন।
সেই সাথে সিনেমার গানগুলি কিন্তু অসাধারণ হয়েছে।গানের কথা একটু এলোমেলো লাগতে পারে।
তবে সেসব যদি মাথা থেকে উড়িয়ে দেন তাহলে গানগুলি আসলে সুন্দর হয়েছে বিশেষ করে ইমরান আর আনিসার গাওয়া একটি গান আছে। তোকে রাখবো খুব আদরে। এক কথায় অসাধারণ হয়েছে গানটি।
সিনেমার প্রথম পোর্টাগনিষ্ঠ অনন্ত জলিল যিনি নায়ক তার বিগত সিনেমা গুলির তুলনায় বেস চেষ্টা করেছেন এই সিনেমায় তবে বোঝা গেছে বিশেষ করে অ্যাকশন সিন গুলোই তিনি ভালো করেছেন।
এছাড়া সিনেমায় যেসব বিদেশি অভিনয় শিল্পীরা ছিলেন তারাও ভালো অভিনয় করেছেন ইনফ্যাক্ট আমি বলবো একমাত্র তারাই অভিনয় করেছেন।
এবার আসি সিনেমার নেতিবাচক দিক নিয়ে। একটু সমালোচনা করা যাক।
অ্যাকশন থ্রিলার গল্প হলেও কোথাও কোন থিল খুঁজে পাবেন না।
শুরুতে আপনার মনে হবে বিরাট কিছু হয়তো একটা হতে যাচ্ছে। কিছুক্ষণ পর আপনার ভুল ভেঙ্গে যাবে।
পুরো সিনেমা জুড়ে কোন রহস্য নেই কোন অ্যাট্রাকশন নাই। দর্শককে হলে ধরে রাখার মতো কোনো বিনোদন ও নেই সিনেমায়।
গল্প একসময় বিরক্তি কর লাগতে শুরু করবে। তখনই যখন আপনি বুঝতে পারবেন বলিউডের সালমান খানের টাইগার এবং ঋত্বিকের ব্যাং ব্যাং সিনেমা থেকে বেশ ধরে ফেলার মত মিল পাওয়া যাচ্ছে।
যদিও সিনেমার শুরুতে বলা আছে যে গল্প কোথা থেকে নেওয়া নাই সম্পূর্ণ কাল্পনিক।
চিত্রনাট্য লেখা হয়েছে কোথাও দেখা যাচ্ছে নায়কের চুল বড় আবার কোথাও দেখা যাচ্ছে চুল ছোট।
কোন সিন থেকে কোন সিন চলে যাচ্ছে আর কোথায় বা ফ্লাশব্যাক হচ্ছে এটার হিসেব রাখা মুশকিল।
যাইহোক সিনেমা শেষ করতে হলে বেশ ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হবে তবে সেই ধৈর্যের ফল মিষ্টি হবে কিনা তা নিশ্চিত করে বলতে পারলাম না।
সিনেমার ডায়লগ নিয়ে আলাদা করে কথা বলতে চাই।
আমি জানিনা এই সিনেমার ডায়লগ কোন বিদেশি লিখেছেন কিনা। এবং সেটা গুগল ট্রান্সলেটর দিয়ে ট্রান্সলেট করে বইয়ের ভাষায় তারা কথা বলেছেন কিনা।
তবে শুদ্ধ ভাষায় কথা বলেননি এটি একদম নিশ্চিত
কিছু ডায়লগ তো হবুহু টাইগার জিন্দা হে থেকে বাংলা করে দিয়ে দিয়েছে।
ভয়াবহ সব ডায়লগ ডেলিভারি বিশেষ করে ভুলভাল ইংরেজিতে এক সময় প্রচন্ড হাস্যকর হয়ে দাঁড়ায় পতিটা সিন।
আমি জানিনা কি দরকার প্রতিটা দৃশ্যে ইংরেজি বাংলা মুখস্ত করে বাংলা বইয়ের ভাষায় ডেলিভারি করার?
তারা চাইলে তাদের যেটা সুবিধা হত সেভাবে কথা বলতে পারতেন।
এর মধ্যে আবার আফগানি ইরানি হিন্দি এসব ভাষা থাকতে পারে।
আমার সম্পূর্ণ জানা নেই তবে অসুবিধে নেই পুরো সিনেমায় বাংলা ও ইংরেজি সাবটাইটেল এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাতে করে আপনার বুঝতে কোন অসুবিধা না হয়।
সিনেমায় খুব সম্ভবত ৯০% চরিত্রই বিদেশি যদিও তার দরকার কি ছিল আমি ঠিক জানিনা, আমাদের দেশে এত ভালো ভালো আর্টিস্ট আছেন।
এমনকি আমাদের দেশে জনপ্রিয় এবং অভিজ্ঞ অভিনেতার মিশা সওদাগর কিন্তু ছিলেন এই সিনেমায় তবে হার্ডলি দুটো কি তিনটে সিনে দেখা গেছে এর কারণ ও স্পষ্ট নয়।
যাই হোক বিদেশি চরিত্রগুলো স্বাভাবিকভাবেই তারা বাংলা কথা বলতে পারেন না। তবে জোর করে অডিয়েন্সের জন্য তাদের মুখে কখনো বাংলা কখনো ইংলিশ কখনো বিদেশী ভাষা এটা কিন্তু খুবই হাস্যকর দেখায়।
বিশেষ করে যারা ভয়েজ অভার দিয়েছেন। তারাও যদি একটু অভিজ্ঞ হতেন।
তাহলে ভুলভাল উচ্চারণে ভুলভাল কথা হয়তো শোনা লাগত না।
সিনেমার লুক নিয়ে আলাদা করে কথা বলতে চাই।
পুরো সিনেমায় একাধিক পোশাক এবং মেকআপ আর্টিস্ট ছিল।
কখনো কখনো অনন্ত জলিল এবং বর্ষা কে ভালো লেগেছে যার পরিমাণ খুবই কম। আবার কোথাও কোথাও একদম বাজে লেগেছে।
বিশেষ করে গানগুলা লোকের দিকে বিশেষ নজর দেয়া উচিত ছিল যেহেতু আমাদের বাংলা সিনেমার একটি আলাদা পরিচয় বহন করে কিন্তু এর গান গুলোই।
মেকআপ এর থেকেও বেশি বেনানান্না মান লেগেছে তাদের পোশাক।
সবশেষে সিনেমার টপ অভিনয় ছিল ২ অভিনেত্রীর অভিনয়।
অনন্ত জলিল এবং বর্ষা যাদের জন্য এত আয়োজন তারা ই হতাশ করেছেন দর্শককে।
আলাদা করে বলতে চাই বর্ষা কে নিয়ে তিনি অভিনেত্রী কিন্তু এত বছরেও ক্যামেরার সাথে সাবলীল হতে পারেননি।
ক্যামেরাই ফলস লুক এক্সপেক্টেশন লেস ডায়লগ ডেলিভারি। আরো যে ভুলভাল উচ্চারণ ছাড়াও তার বডি ল্যাঙ্গুয়েজে একেবারে কখনোই মনে হয় নাই তিনি এই সিনেমার জন্য ই চরিত্র।
যেটা খুবই হতাশা জনক।
একপর্যায়ে একটি দৃশ্এ একটি খুব আবেগময় দৃশ্য চলছিল, বর্ষা কাদছেন কিন্তু সেই মুহূর্তে পুরো হলের দর্শক হাসছেন।
এ থেকেই বুঝে নিতে পারেন কতটা বেমানান অভিনয় করেছেন এই অভিনেত্রী।
তাছাড়া সিনেমায় তাকে এত বড় একটি অফিসারদের চরিত্রে দেখানো হয়েছে অথচ সে রকম কোনো একটিভিটি তাকে দেখানো হয়নি।
একটা বিষয় বলে রাখা ভালো এই বিষয়টা কিন্তু আমাদের সমাজের কিন্তু একটা গতানুগতিক দিক কিন্তু প্রতিফলন করে কারণ নায়ক অনন্ত জলিল এবং বর্ষা তারা দুজনেই কিন্তু একই প্রফেশনে আছেন।
তারা দুজনই কিন্তু প্রশাসনের অফিসার, অথচ তাদের দুজনকে কিন্তু সমানভাবে স্কিন প্রেজেন্ট দেয়া হয়নি।
সমানভাবে কোন অপারেশনে তাকে দেখানো হচ্ছে না।
ইন ফ্যাক্ট এখানে দেখা যাচ্ছে এখানে বর্ষা অফিসার এর চেয়ে বেশি তিনি অনন্ত জলিলের স্ত্রী হিসেবে বেশি চিন্তিত যে তাকে যে পাওয়ারফুল ক্যারেক্টার দেয়া হয়েছে তিনি তাকে কিন্তু সেরকম কোনো দৃশ্যে দেখা যায়নি।
বরং তাকে অনন্ত জলিলের স্ত্রী বর্ষায় লেগেছে।
এবার আসি অনন্ত জলিলের অভিনয়।
আগেই বলেছি তিনি চেষ্টা করেছেন তবে খুব একটা পেরে উঠতে পারেননি।
তার মধ্যে কোথাও কোথাও নায়ক নায়ক ভাব আছে তবে সেটা কি ঠিক তুলে আনা যাচ্ছে না কেন যাচ্ছে না এটা আমার জানা নেই কারণ তিনি যথেষ্ট ওয়েলমেন্ট।
যাইহোক তিনিও আসলে রোবটের মত অভিনয় করেছেন। কোথাও কোথাও এক্সপ্রেশন আনার চেষ্টা করেছেন তবে শেষমেষ তা পুরাই হাস্যকর লেগেছে।
সবশেষ বলতে চাই ১০০ কোটি টাকা খরচ করে সর্বাধিক প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দিয়েও দর্শককে নতুন কিছু উপহার দিতে পারলো কিনা তা একটু সন্দেহজনক।
আপনি যাচাই করতে চাইলে দেখে আসতে পারেন, আমাদেরকে জানাতে পারেন আপনার কেমন লেগেছে *দিন দ্য ডে*বাই দ্যা ওয়ে সিনেমার নাম কেন দিন দ্যা ডে তা আমার জানা নেই আপনারা জানতে পারলে অবশ্যই আমাকে জানাবেন।
YouTube Monetization Offer
৪০০০ ঘন্টা ওয়াচ টাইম এবং ১০০০ সাবস্ক্রাইবার নিন মাত্র ৩০৯০ টাকায়। ১০০% সেভ ওয়ে।
Contract Facebook: https://www.facebook.com/profile.php?id=100082805889874
দেখা হচ্ছে পরবর্তী কোনো পোস্ট নিয়ে ততক্ষণ পর্যন্ত ভালো থাকবেন আল্লাহ হাফেজ
The post কেমন ছিল অনন্ত জলিলের ১০০ কোটি টাকার সিনেমা °দিন দ্যা ডে° ? | Din – The Day Movie Bangla Review appeared first on Trickbd.com.
from Trickbd.com https://ift.tt/iQx1f3Z
via IFTTT
Emoticon